শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন
রিপোর্ট: ভয়েস অফ সুন্দরবন
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ২৬ নং যতিন্দ্রনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রজনী গন্ধা মিস্ত্রী ও ১৩৯ নং সরকারি হাটছালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা মধুশ্রী জোয়ারদারের (মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরীপ্রাপ্ত) বিরুদ্ধে নিজ কর্মস্থলে না থেকে ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নজর এড়িয়ে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে একে অন্যের কর্মস্থলে শিক্ষকতা করছেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষিকা রজনী গন্ধা মিস্ত্রির কর্মস্থল ২৬ নং যতিন্দ্রনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কিন্তু দেখা যায় তিনি আছেন ১৩৯ নং হাটছালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অপরদিকে অভিযুক্ত অপর শিক্ষিকা মধুশ্রী জোয়ারদারের কর্মস্থল ১৩৯ নং হাটছালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হলেও তাকে পাওয়া গেছে ২৬ নং যতিন্দ্রনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
এই অনৈতিকতার কারণ খুজতে গিয়ে জানা যায় উভয় নিজ নিজ সুবিধার স্বার্থে শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছ থেকে মিথ্যা ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে সাময়ীক সময়ের জন্য একে অন্যের স্থলে যাওয়ার অনুমতি পেয়ে অত্যান্ত চালাকচতুর দুই শিক্ষিকা এক বছরেরও বেশি সময়ধরে চাকরীবিধি পরিপন্থী এ কাজ করে আসছে। কেবলমাত্র কোন পরিদর্শক স্কুল পরিদর্শনে গেলে তখন তারা নিজ নিজ কর্মস্থলে আসেন।
এ বিষয়ে মধুশ্রী জোয়ারদারের সাথে তার কর্মস্থলে গিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি প্রথমে সাংবাদিকের অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন ও তার ফোন থেকে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে ফোন করেন। পরে তথ্যউপাত্ত সহ তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন “আমি উর্ধতন কতৃপক্ষকে জানিয়ে তারপর সেখানে ছিলাম”
পরে রজনী গন্ধা মিস্ত্রির সাথে কথা হলে তিনিও একই কথা বলেন। ১৩৯ নং হাটছালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবতোষ মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি অস্বীকার করেন পরে তিনি বলেন “আমি ছোটখাট চাকরী করি, আমি বলতে পারবোনা” তাহলে কি উর্ধতন কতৃপক্ষের অনুমতি আছে তখন বলেন “আমার কথায় কি আর শিক্ষক আসবে, তবে যেটা হয়েছে অন্যায় হয়েছে”
এ ব্যাপারে ২৬ নং যতিন্দ্রনগর স্কুলের প্রধান শিক্ষক লাইলি বেগমের সঙ্গে ফোনালাপে জানতে চাইলে তিনি বলেন “মানবিক কারনে রজনি কে তিনি এ সুযোগ দিয়েছিলেন” “পারিবারিক সমস্যার কারনে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অল্প কয়েকদিনের জন্য অনুমতি দিয়েছিলেন, তিনি তো দুরের মানুষ আর তার হয়তো বিষয়টি মনেও নেই”
তাদের সঙ্গে কথাবলে বিষয়টি প্রতীয়মান হয় যে উভয়ের সহযোগিতায় অভিযুক্ত এই দুই শিক্ষিকা নিয়ম শৃঙ্খলা পরিপন্থী এ কাজ করেছেন। যাহা চাকরিবিধি অনুযায়ী অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হয়। যা ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ২০১৯ সালের সরকারি কর্মচারী (নিয়মিত উপস্থিতি) বিধিমালা, ২০১৯ সালের বিধিমালার সংশ্লিষ্ট বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন “এ বিষয়টা আমি জানতাম না, এমন কিছু হলে আমি ব্যবস্থা নেবো” অথচ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তির পাওয়া তথ্যমতে বিষয়টি জানাজানি হলে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অভিযুক্ত শিক্ষিকাদের ডেকে চাকরীবিধি লঙ্ঘনের কোন ব্যবস্থা না নিয়ে যার যার কর্মস্থলে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।