বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২১ অপরাহ্ন

শিরোনাম:
ব্রেকিং নিউজ:

কুমিল্লা জেলার প্রতিটি থানায় সংবাদদাতা নিয়োগ দিচ্ছে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘কুমিল্লার কথা’। আপনি যদি সাংবাদিকতায় আগ্রহী হন, সত্য ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে চান, তাহলে এ সুযোগ আপনার জন্য। বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন 'কুমিল্লার কথা' অফিসে বা নিন্মে দেয়া মোবাইল নাম্বারে।

মেঘনায় সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে প্রতারণার অভিযোগ

মেঘনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২১ অপরাহ্ন

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার বড় নোয়াগাঁও গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাফফর হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম সমাজসেবা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন। ওই কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারি ভবন নির্মাণের কথা বলে তাঁর স্বামীর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নেন, কিন্তু প্রতিশ্রুতি দেওয়া কাজটি আর বাস্তবায়ন করেননি এবং টাকা ফেরতও দেননি বলে তাঁর অভিযোগ।

লিখিত এক অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. সেতারুজ্জামান, যিনি একই এলাকার মৃত সামাদ মাস্টারের ছেলে, ২০১৭ সালে দাউদকান্দি উপজেলায় দায়িত্ব পালনকালে অতিরিক্তভাবে মেঘনা উপজেলায় সমাজসেবা কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। সে সময় তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন। একই সময়ে পারিবারিক সম্পর্কের সুবাদে মুক্তিযোদ্ধা মুজাফফর হোসেনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন তিনি।

সুরাইয়া বেগম বলেন, “আমার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাফফর হোসেনের সঙ্গে সেতারুজ্জামানের আত্মীয়তা ছিল। একদিন সে আমাদের বাড়িতে এসে জানায়, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকার ৩০ লাখ টাকার একটি বিল্ডিং দেবে, কিন্তু বিল পাস করাতে ‘উপরের অফিসারদের’ দিতে হবে পাঁচ লাখ টাকা। সে আশ্বাস দেয়, টাকা দিলে ছয় মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হবে। তাছাড়া আমার স্বামী গরিব মানুষ ছিলেন, তবু তাঁর কথায় বিশ্বাস করে ধারদেনা করে পাঁচ লাখ টাকা জোগাড় করেন। আমি ও বড় ছেলে মিলে সেই টাকা মেঘনা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে সেতারুজ্জামানের হাতে তুলে দিই। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো কাজ শুরু হয়নি। যোগাযোগের চেষ্টা করলে সে নানা অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে যায়। প্রতারণার শোকে ও ঘুরে বেড়ানোর ক্লান্তিতে আমার স্বামী ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।”

সুরাইয়া বেগম আরও বলেন, “আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর জানাজায় এসে সেতারুজ্জামান আমাকে বলে, ‘চিন্তা করবেন না, কিছুদিনের মধ্যে টাকাটা ফেরত দেব, তবে কাউকে এ বিষয়ে জানানোর দরকার নেই। কিন্তু সেই দেখা ছিল শেষ দেখা, এরপর আর কোনো খোঁজ নেননি তিনি। আমি এখন স্বামীহারা, অসহায়। ধার করা টাকার জন্য মানুষ আমাকে প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে। পাওনা টাকা না পেয়ে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছি। মৃত্যুর আগে শুধু আমার টাকাটা ফেরত চাই।”

এ ঘটনায় তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের পর জেলা সমাজসেবা কার্যালয় বিষয়টি তদন্তের উদ্যোগ নেয়। ৭ অক্টোবর পাঠানো এক চিঠিতে জানানো হয়, অভিযোগের তদন্ত ২০ অক্টোবর সকাল ১১টায় জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। তবে নির্ধারিত সময়ে তদন্ত সম্পন্ন হলেও ঘটনার কোনো সুষ্ঠু সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধা নারী।

অভিযুক্ত কর্মকর্তা মো. সেতারুজ্জামান বর্তমানে গাজীপুর জেলার কোনাবাড়ী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র (বালিকা)-এর সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বক্তব্য জানতে চাইলে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।