প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ২৪, ২০২৫, ৯:২২ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ১৬, ২০২৫, ১০:০৬ এ.এম
শ্যামনগরে সেনা অভিযানে উদ্ধার ৮৪,৪০০ ইউএস ডলার, গ্রেফতার ২, পলাতক আরও কয়েকজন

ভয়েস অব সুন্দরবন।।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রামজীবনপুর গ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মোট ৮৪ হাজার ৪০০ ইউএস ডলার, যার বর্তমান বাজারমূল্য আনুমানিক সাড়ে ৯ কোটি টাকা। একই সঙ্গে এই পাচার চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে জিএম সুলতানুল আরেফিন ও আব্দুর রহমান নামে দুজনকে। এই ঘটনায় পলাতক রয়েছেন আরও দুইজন, যাদের একজন বিদেশ ফেরত এবং অপরজন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি। এদিকে এঘটনায় গত ১৪/০৭/২৫ তারিখে শ্যামনগর থানায় ২১ নং মামলা দায়ের হয়েছে।
ঘটনার অন্যতম চাঞ্চল্যকর দিক হলো গ্রেফতার হওয়া জিএম সুলতানুল আরেফিন হচ্ছেন শ্যামনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক কমিটির ১নং সদস্য এবং মৃত জিএম শফিউল আযমের ছেলে। তাঁর গ্রামের বাড়ি শ্যামনগরের ভূরুলিয়া ইউনিয়নের নাগবাটি গ্রামে।
জানা যায়, গত ৮ জুলাই ২০২৫ তারিখে আব্দুল মালেক নামে এক ব্যক্তি পালাউ (Palau) দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ইউএস ডলার নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। ডলারগুলো বিভিন্ন প্রবাসী বাংলাদেশির কাছ থেকে সংগৃহীত ছিল, যা দেশের ভেতরে তাদের আত্মীয়দের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু দেশে আসার পর আব্দুল মালেক ডলারগুলো বুঝিয়ে না দিয়ে গা-ঢাকা দেন। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর জানা যায়, তিনি শ্যামনগরের রামজীবনপুরে শ্বশুর আব্দুর রহমানের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
এ খবর পেয়ে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে কালিগঞ্জ আর্মি ক্যাম্পে অভিযোগ জানানো হয়। এর ভিত্তিতে ১৩ জুলাই রাতে সেনাবাহিনীর একটি টিম অভিযান চালিয়ে রামজীবনপুর এলাকা থেকে আব্দুর রহমান ও জিএম সুলতানুল আরেফিনকে গ্রেফতার করে।
তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, পলাতক আসামি মিজান হাজীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া যায় ডলারের বস্তা। উদ্ধারকৃত মুদ্রার মধ্যে ছিল,১০০ ডলারের ৭৮৩টি নোট (মোট ৭৮,৩০০ ইউএস ডলার),৫০ ডলারের ১২২টি নোট (মোট ৬,১০০ ইউএস ডলার)
এই চক্রের সদস্যদের রক্ষা করতে একটি রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের নামে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, ঘটনার পরপরই মীমাংসার নামে বিভিন্ন মহলে তদবির শুরু হয়।
ঘটনার পর Foreign Exchange Regulation Act, 1947-এর ২৩(০) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে পলাতক থাকা দুই আসামির গ্রেফতার এবং পাচার চক্রের গোড়ার দিক উন্মোচন এখনো হয়নি। মামলার অগ্রগতি নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে কেউ সরাসরি কথা বলতে রাজি না হলেও, সংশ্লিষ্ট মহল থেকে ইঙ্গিত মিলেছে তদন্তে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপ রয়েছে।
১৩ জুলাই রাতে সেনা ও পুলিশ অভিযানে উদ্ধার হয় কেবলমাত্র বৈদেশিক মুদ্রা। অথচ স্থানীয়দের ধারণা অনুযায়ী অভিযানের সময় সোনাও থাকার কথা ছিল। এদিকে প্রসাশনের পক্ষ থেকে জোরে সোরে পলাত্বক আসামীদের আটকের জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
##
Copyright © 2025 cumillarkotha.com. All rights reserved.